ঘরকে অবসাদ নয়, প্রশান্তির স্থান হিসেবে গড়ে তুলুন।
ঘরের রং কেবল চোখে সুন্দর লাগার জন্য নয়, এর বাইরেও আপনার মনকে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। শরীর ও মনকে স্বস্তিতে রাখতে ঘরের রঙের রয়েছে বড় ভূমিকা । রং প্রভাব ফেলতে পারে মানসিকতায়, এমনকি শরীর–স্বাস্থ্যের ওপর একটি অভ্যন্তরীণ ঘরের রঙ আপনার মেজাজের উপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিভাবে রং মানুষের আচরণ এবং আবেগকে প্রভাবিত করে তার অধ্যয়ন, অভ্যন্তরীণ ডিজাইনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আপনি কি জানেন যে আপনি আপনার বাড়িতে যে রঙগুলি ব্যবহার করেন তা আপনার আবেগের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে? । তাই সব দিক বিবেচনায় নিয়েই পছন্দ করে ফেলুন, কোন ঘরে কী রং হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ বা ইলিউশন ব্যবহার করলে ফ্লোরাল কিংবা লতাপাতা নকশার ইলিউশনকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। পুরো বাড়ির ছাদ ও মেঝেতেও সাদা রংয়ের উপস্থিতি থাকলে ভালো। এতে ঘরগুলোকে প্রশস্ত মনে হয়। অফ-হোয়াইট কিংবা সাদার পরিবর্তে চার দেয়ালজুড়ে একই রং ব্যবহার করলে হিজিবিজি ও আবদ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
ঘর অনুযায়ী রং নির্বাচন
বসার ঘর:
সবার আগে বসার ঘরটাই বাইরের মানুষের চোখে পড়ে। তাই বসার ঘরটা রুচিশীল রংয়ে রাঙানো জরুরী। এ রুমের দরজা দিয়ে ঢুকতেই যে দেয়াল চোখে পড়ে, সেখানে বিভিন্ন হালকা রং বা খুব গাঢ় রং দিয়ে নতুনত্ব আনা যায়। আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া হেরিটেইজ পাওয়া যায়। সেখানে এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন পেপার ম্যাশা, হেরিটেজ, যেমন স্টেন, মাইক্রোস্টোন বা বাইরামিং ব্যবহার করে দেয়ালকে আকর্ষণীয় করা যায়। এ ঘরের রং নির্বাচনে তাই সতর্ক থাকতে হয়। এ ঘরের রং এমন হবে, যাতে রঙের মধ্যে একটা অভ্যর্থনার আমেজ ফুটে ওঠে।
খাবার ঘর:
হলুদ বা কমলার মতো উষ্ণ, উজ্জ্বল রংগুলো আমাদের ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের দেয়াল ও ইন্টেরিয়রে সাধারনত এই তিনটা রংকে গুরুত্ব দেয়া হয়। আবার হই-হুল্লোড়, আড্ডা এগুলো খাবার ঘরেই খুব বেশি হয়। তাই খাবার ঘরে যে কোনো উজ্জ্বল রংয়ের ব্যবহার সেখানে সুন্দর অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
প্রধান শোবার ঘর:
দিনশেষে বিশ্রামের জন্য শোবার ঘরটাই আপনার স্বস্তির জায়গা। তাই শোবার ঘরের জন্য হালকা, সতেজ, শান্তি ও স্নিগ্ধ আমেজ আনে এমন রং থাকা উচিত। এ ক্ষেত্রে হোয়াইট, অফ হোয়াইট, লাইট ভায়োলেট, লাইট গ্রিন, লেমন ইয়েলো, ফ্রেঞ্চ গ্রে, ক্রিম ইত্যাদি শীতল রং দেওয়া যায়। এই ধরনের রং মনে আনে শান্তি ও স্বস্তির আমেজ। তাই শোবার ঘরে এই রংগুলোরই বেশি ব্যবহার হয়। সেক্ষেত্রে গাড় রং বেডরুমে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
বাচ্চাদের ঘর:
ছোট শিশুদের ঘরের রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারন রং বাচ্চাদের মনের ওপর প্রভাব ফেলে অনেক বেশি। বাচ্চাদের ঘরে রং করার আগে তার সঙ্গে কথা বলে পছন্দ বুঝে নেওয়া যেতে পারে। শিশুর পছন্দের কোনো চরিত্র থাকলে সেটা আঁকিয়ে নিতে পারেন দেয়ালে। তবে এখানে এমন চরিত্রই আঁকা উচিত, যা শিশুর অন্তত পাঁচ-আট বছর পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে।
অতিথি ঘর:
আপনি আপনার অতিথি ঘরের জন্য বিভিন্ন রঙের একটি সমন্বয় নির্বাচন করতে পারেন, যেমন এগশেল হিউস, লেমনের বিভিন্ন শেডগুলি, ক্রিমি নিউট্রাল অথবা সমুদ্রের রঙগুলি৷ এবং সেটিকে উজ্জ্বল এবং আরামদায়ক করার জন্য, একটি চকোলেট ব্রাউন রঙ হল আপনার গেস্ট রুমের জন্য একটি সম্পূর্ণ সঠিক নির্বাচন৷ আপনি সেটিতে সলিড কাঠের আসবাবের সাহায্যে একটি পরিপূর্ণতা আনয়ন করতে পারেন, যাতে আপনার অতিথিরা আরও বেশি স্বাগত অনুভব করেন৷
পড়ার ঘর:
যেখানে লাল হল মনোযোগ এবং একাগ্রতার উন্নতি ঘটানোর রঙ হিসাবে সম্পূর্ণ সঠিক, আপনি সবুজ, ঘন ছাইরঙ, অথবা রুপোলি রঙগুলি নিয়েও পরীক্ষা করতে পারেন, কারণ এই শেডগুলি সৃষ্টিশীলতা উন্নতি ঘটাতে এবং একাগ্রতা বৃদ্ধি করার সহায়ক হিসাবে মনে করা হয়ে থাকে৷
হোম অফিসের দেওয়ালের জন্য রঙ:
একটি হোম অফিসের জন্য ছাইরঙের বিভিন্ন শেডগুলি হল উৎকৃষ্ট দেওয়ালের রঙ৷ প্রধান দেওয়ালগুলির জন্য সর্বোৎকৃষ্ট হল ঘন বর্ণের শেডগুলি যেখানে গাঢ় নীল রঙ কমপিউটারের প্রেক্ষাপটের জন্য একটি দারুণ নির্বাচন৷ বৈকল্পিকভাবে, আপনি পার্থিব সবুজ, শেওলা, অথবা পিচ রঙের শেডগুলি অথবা হলুদের মত, যেটির একটি ধনাত্মক প্রভাব থাকে এবং সৃষ্টিশীলতার জন্য সহায়ক, উজ্জ্বল রঙগুলি পছন্দ করতে পারেন৷
রান্নাঘর:
রান্নাঘরের জন্য আদর্শ রঙগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়, সাদা, ছাইরঙ, হলুদ এবং সবুজ৷ এই রঙগুলি আপনার রান্নাঘরটিকে করে তুলবে আরও উজ্জ্বল৷ উষ্ণতর টোনগুলি খাওয়ার ইচ্ছাকে উদ্দীপিত করে৷ তাই, আপনি আপনার রান্নাঘরকে খাদ্য রসিকদের স্বর্গে পরিণত করার জন্য, নির্বাচন করতে পারেন হট চিলি অথবা অরেঞ্জ রঙ৷
বাথরুম:
বাথরুম হচ্ছে আপনার ঘরের সবচেয়ে শীতল এস্থান। এর শীতলতা ধরে রাখতে নীল, সবুজ অথবা ক্রিমি হোয়াইট রঙগুলি ব্যবহার করুন। এছাড়াও বিকল্প হিসাবে গ্রে এবং সাদা রঙও ব্যবহার করা যেতে পারে। পিস্তাচিও হল আরও একটি আধুনিক রং যেটি আপনি আপনার বাথরুমকে একটি মসৃণ স্থানে পরিণত করতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন৷
রং নির্বাচনে যে ভুলগুলো এড়িয়ে যাবেন
ঘরের রং নির্বাচন করা খুব সহজ কিছু না। বরং মাঝে মাঝে আমাদের ধাঁধায় পড়ে যেতে হয়, কোন ঘরের জন্য কোন রং নির্বাচন করবো সেটা নিয়ে। তাই রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু ভুল সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। ঘরের জন্য রং পছন্দ করতে গিয়ে যে ভুলগুলো সবচেয়ে বেশি হয় সেগুলো হলো:
প্রথমেই ওয়াল পেইন্ট নির্বাচন করা: ঘরের আসবাবপত্রের কথা মাথায় না রেখেই অনেকসময় আমরা ঘরের জন্য রং নির্বাচন করে ফেলি। এই ভুলটা করা যাবে না। প্রথমে আমাদের মাথায় রাখতে হবে, ঘরে কোন কোন রংয়ের আসবাবপত্র রয়েছে। সেই রংয়ের সাথে যায় এমন ওয়াল পেইন্ট বেছে নেয়া উচিত।
ঘরের ‘মুড’ নির্ধারন করতে না পারা: প্রতিটা ঘরের আলাদা মুড বা আবহ থাকে। যেমন, আপনি যদি চান মাস্টার বেডরুমের পরিবেশ হবে শান্ত, তাহলে হালকা কোনো রং বেছে নিতে হবে। তেমনি ড্রয়িংরুমে যদি চান প্রাণবন্ত পরিবেশের আবহ আনতে, সেক্ষেত্রে যে কোনো উজ্জ্বল রং নির্বাচন করা উচিত।
সব ঘরের জন্য একই ধরনের রং বেছে নেয়া: সব ঘরে একই টাইপের রং ব্যবহার করলে সেটা হয়ে ওঠে একঘেয়ে। এই জন্য ঘরের ব্যবহার বুঝে সেটাতে উজ্জ্বল বা হালকা রং বেছে নিতে হবে।
প্রাকৃতিক আলোর প্রতি খেয়াল না রাখা: যত বৈচিত্রপূর্ণ লাইটই ব্যবহার করি না কেন, আউটলুক কেমন হবে সেটা নির্ভর করে প্রাকৃতিক আলো কতটুকু ঘরে প্রবেশ করতে পারছে তার উপর। যদি যথেষ্ট পরিমাণে আলো বাতাস ঘরে প্রবেশ করে, তাহলে হালকা রং বেছে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু ঘরের অবস্থান যদি এমন হয় যে খুব বেশি দিনের আলো ঢুকতে পারে না, সেক্ষেত্রে উজ্জ্বল রং ব্যবহার করা উচিত।
রং পরীক্ষা না করা: ঘরের ভেতরে বা বাইরে, যেখানেই রং করেন না কেন, সেটা বেশ ব্যয়বহুল। তাই হুট করে রং নির্বাচন না করে সেটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা উচিত। দোকানে যে রং ভালো লাগবে সেটা আপনার দেয়ালে নাও ভালো লাগতে পারে। তাই রং করার আগে ছোট করে ট্রায়াল করে নিতে পারেন। এভাবে পরীক্ষা করে নিলে রং নির্বাচনটা যথাসম্ভব নিখুঁত হবে।
ড্যাম্প দেয়ালে রং করার নিয়ম
নোনা ধরা দেয়াল ভালো রাখতে ঘরে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন বা বাতাস চলাচলের সুবিধা থাকা প্রয়োজন। দেয়ালের ড্যাম্প পুরোপুরি সারিয়ে তোলা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। দেয়ালের পুরনো প্লাস্টার তুলে ড্যাম্প নিরোধক কেমিক্যাল ব্যবহার করে তারপর আবার প্লাস্টার করতে হবে। পুরনো দেয়ালে ছত্রাক জন্মালে রং করার আগে তা চেঁছে তুলে ফেলতে হবে।তারপর দেয়ালে অ্যান্টি-ফাঙ্গাশ সলিউশন ব্যবহার করুন। এতে দেয়ালের রং দীর্ঘস্থায়ী হবে। অবশ্যই দেয়ালের বাইরে ও ভেতরে ড্যাম্প নিরোধক রং ব্যবহার করতে হবে। ড্যাম্প দেয়ালে চুন রং ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ছত্রাক আরো দ্রুত হয়।
ড্যাম্প দেয়ালে রং করতে সাধারণত চারটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। ধাপগুলো হলো—
সারফেস প্রিপারেশন: প্লাস্টার ভালোভাবে শুকাতে হবে এবং খুব ভালোভাবে কিউরিং হতে হবে।প্লাস্টার করার ৪৫ দিন পর রং করা উচিত। রং শুরু করার আগে যেকোনো ধরনের ড্যাম্প, স্যাঁতসেঁতে, ভেজা বা নষ্ট থাকলে তা ঠিক করে নিন। এরপর পাথর বা স্যান্ডস্টোন দিয়ে ভালোভাবে ঘষে নিতে হবে। প্লাস্টার করা দেয়াল সমতল হতে হবে। সমতল না থাকলে পাথর দিয়ে ঘষে সমতল করতে হয়।এতে আলগা ময়লা বা অন্য কিছু থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। এরপর চুনের পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ভালো হয়। এতে প্লাস্টার ভালোভাবে শুকিয়ে যায়। শেষে স্যান্ডপেপার বা শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে নিন।
প্রাইমার বা আস্তর: সারফেস প্রিপারেশন হলে পরে প্রাইমার বা আস্তর দিতে হয়। এক আস্তর দেওয়া হয় এই প্রাইমার। মূলত প্লাস্টার ও রঙের মধ্যে আঠালো সম্পর্ক তৈরি করে এই প্রাইমার। প্রতি গ্যালনে প্রাইমার ৪৫ স্কয়ার মিটার আস্তর দেওয়া যায়। রোলার বা ব্রাশ দিয়ে প্রাইমার দেওয়া হয়। দেওয়ার আগে এই প্রাইমার পানি দিয়ে পাতলা করে নেওয়া হয়। এটি আঠালো সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পাশাপাশি সারফেসকে মসৃণ করে। এ ছাড়া শোষণক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং রং সুন্দরভাবে ও বেশি জায়গায় ছড়িয়ে দেয়।
পুটি: কোনো ফাটল বা সমস্যা থাকলে পুটি করা হয়। একে ছিট পুটিও বলা হয়। কমপক্ষে চার দিন এই পুটি শুকিয়ে নিতে হবে। বেশি পুটি যেখানে থাকবে, সেখানে স্ক্র্যাপ করে নিতে হবে। এক গ্যালন প্লাস্টিক পেইন্টের সঙ্গে এক লিটার এনামেল পেইন্ট ও ২৫ কেজি চক পাউডার মিশিয়ে এই পুটি তৈরি করা হয়।
রঙের কোট: রং দুই থেকে তিনবার প্রলেপ দেওয়া হয়। প্রথম প্রলেপের পর সাত দিন শুকানোর সময় দিতে হবে। এরপর দ্বিতীয় প্রলেপ দেওয়া হয়। এতেও যদি রং ভালো না হয়, যেমন—পরিচ্ছন্ন না হয়ে ছোপ ছোপ থাকে বা রং হালকা হয় তাহলে দ্বিতীয় প্রলেপের তিন দিন পর তৃতীয় প্রলেপ দেওয়া হয়। প্রথম প্রলেপের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২০ ভাগ পানি মেশানো হয়। দ্বিতীয় প্রলেপের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ ভাগ পানি মেশানো হয়। ড্যাম্প, স্যাঁতসেঁতে বা ভেজা দেয়ালে পেইন্ট করা যাবে না। আর্দ্রতা ২০ থেকে ৫০ ভাগের মধ্যে থাকতে হবে। সরাসরি সূর্যের আলো যেন রং করার সময় না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ভেতরের দেয়াল বনাম বাইরের দেয়ালের রং নির্বাচন
ঘরের ভেতরের এবং বাইরের দেয়ালের কাজ বিপরীতমুখী। তাই রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঘরের ও বাইরের দেয়ালের জন্য আলাদা রং বেছে নেয়া উচিত।
ঘরের ভেতরের রং: ঘরের ভেতরে দুই ধরনের রং বেছে নেয়া যেতে পারে। একটি হচ্ছে ডিসটেম্পার, অন্যটির নাম প্লাস্টিক পেইন্ট। ডিসটেম্পার করা হয় সাধারণত ইট, কংক্রিট ও প্লাস্টারের ওপর। অ্যাক্রেলিক, সিনথেটিক, ড্রাই ইত্যাদি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ডিসটেম্পার। অ্যাক্রেলিক ডিসটেম্পার পানি দিয়ে ধোয়া যায়। কিন্তু সিনথেটিক ও ড্রাই ডিসটেম্পার পানি দিয়ে ধোয়া যায় না। ডিসটেম্পার ব্যবহার করতে না চাইলে সেক্ষেত্রে প্লাস্টিক পেইন্ট বা প্লাস্টিক ইমালশন বেছে নিতে পারেন। এটা হচ্ছে পানি ভিত্তিক রঙ, যা দীর্ঘস্থায়ী। এই রং আপনি পানি দিয়েও ধুতে পারবেন। প্লাস্টিক পেইন্ট তিন ধরণের- রেগুলার, ইকোনমিক ও প্রিমিয়াম ইমালশন।
বাড়ির বাইরের দেয়ালের রং: বাড়ির বাইরের দিকে যে রং-ই ব্যবহার করেন না কেন, সেটা হতে হবে অনেক বেশি টেকসই ও সুরক্ষিত। কারন বাইরের দেয়ালকে রোদ- বৃষ্টির প্রভাব মোকাবেলা করতে হয়। তাই অনেকে সিমেন্ট পেইন্ট রং বেছে নেন। এই রং ওয়াটার বেজড রং। তবে বাইরের দেয়ালে অ্যাক্রেলিক ইমালশন রংয়ের ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি। কারন এই রং দীর্ঘস্থায়ী ও পানি দিয়ে ধোয়া যায়। অনেকে আবার টেক্সার প্লাস্টার ব্যবহার করে থাকেন। এটা ইমালশন ভিত্তিক রঙ। এতে পানির বদলে ইমালশন ব্যবহার করা হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
বাড়িতে একটাই রং এখন আর এমনটি হয় না। হরেক রকম রঙের বৈচিত্র্যময় ব্যবহারই এখন ফ্যাশন। কোন ঘরে কেমন রং মানায়, ভালো করে জেনে নিন
* বসার ঘরে কমলা, ঘিয়ে, হালকা সবুজ ইত্যাদি রং মানাবে। ঘর বড় হলে গাঢ় রং ব্যবহার করুন।
* খাবার ঘরে বিস্কিট, সবুজ বা সাদা রং মানায়। গাঢ় রং না হওয়াই ভালো।
* শোবার ঘর বড় হলে এবং বেশি আসবাব না থাকলে বিস্কিট, নীল রং ব্যবহার করুন। ঘর ছোট হলে ক্রিম, গোলাপি, শ্যাওলা, সবুজ ইত্যাদি রং ব্যবহার করুন।
* শিশুদের ঘরে গোলাপি, সবুজ, হলুদ, বেগুনি রং ব্যবহার করুন। ঘর আকর্ষণীয় করতে দেয়ালের রঙের সঙ্গে কার্টুন, স্টিকার ও মাছ, গাছ, চাঁদ-তারা দিয়ে সাজান।
* রান্নাঘরে এক রঙের সাদা বা হালকা নকশার টাইলস ব্যবহার করুন।
* বারান্দায় সাদা, ঘিয়ে বা অফ রং ব্যবহার করুন। যদি টবে গাছ থাকে তাহলে দেয়ালে সবুজ ব্যবহার করুন।
খেয়াল রাখুন
* হালকা রঙে ঘর বড় দেখায়। গাঢ় রঙে ঘর ছোট মনে হয়। নীল, সবুজ, বেগুনি স্নিগ্ধ রঙের তালিকায় পড়ে।
* কম আলোর ঘরে হালকা রং ব্যবহার করুন।
* ঘরের সিলিংয়ের রং নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। সিলিংয়ে সাদা বা দেয়ালের রং থেকে আরো হালকা রং ব্যবহার করলে ঘর উজ্জ্বল দেখায়।